খরগোশ বাচ্চা দিলে কি করবেন |খরগোশ পালন | Baby Rabbit Care | Khorgos Palon
খরগোশ বাচ্চা দিলে কি করবেন |খরগোশ পালন | Baby Rabbit Care | Khorgos Palon
আমার খরগোশ চারটি বাচ্চা দিয়েছে। ভিডিওতে যে বাচ্চা গুলো দেখছেন ওদের বয়স আজকে ১ দিন। আজকের ভিডিও তে আপনি জানবেন খরগোশ বাচ্চা দিলে করনীয় কি। এবং খরগোশের বাচ্চা হবার পর থেকে কি কি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা আপনাকে অবলম্বন করতে হবে।
তো আসুন শুরু করি।
এর আগের ভিডিওটিতে আমি আপনাদের দেখেছিলাম খরগোশের বাচ্চা দেয়ার লক্ষণ কি । সেখানে একটা মা খরগোশ মুখে করে তুলা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করছিলো বাচ্চা দেওয়ার জন্য। ওই খরগোশটাই রাতের বেলা চারটা বাচ্চা দিয়েছে। কিন্তু বাচ্চা দেবার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আপনি যদি সঠিক নিয়ম না জানেন তবে খরগোশের সবগুলো বাচ্চা বাঁচাতে পারবেন না।
প্রথমত
খরগোশের বাচ্চা মারা যাওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হল কিছু কিছু সময় মা খরগোশ বাচ্চাদের খাওয়ায় না।
খরগোশের বাচ্চা ঠিকভাবে দুধ খেয়েছে কিনা এটা আপনার দিনে কয়েকবার চেক করতে হবে। এ বাচ্চাগুলোকে দেখুন এগুলোর পেটগুলো কিন্তু পুরো টাইটম্মুর ভাবে ভরে আছে । বাইরে থেকে খালি চোখে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ওরা প্রচুর পরিমাণে দুধ পান করেছে। আপনার কাছে বাচ্চাগুলোকে দেখে যদি মনে হয় ওদের পেট গুলো পড়ে আছে তবে মা খরগোশ টাকে ধরে নিয়ে দিনে দুই-তিনবার বাচ্চাগুলোকে জোর করে খাওয়াতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে আপনি মা খরগোশটা আর সামনের দুই পা এবং পেছনের দুই পা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে বাচ্চাগুলোকে ওর বুকের কাছে দেন বাচ্চাগুলো তার প্রয়োজন মত দুধ খেয়ে নেবে। বিশেষ করে বাচ্চার জন্মের দিন থেকে 14 তম দিন পর্যন্ত মানে প্রথম দুই সপ্তাহ বাচ্চাগুলো কিন্তু মায়ের বুকের দুধ ছাড়া বাইরের কিছুই খাবে না এ সময় আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে মা বাচ্চাগুলোকে খাওয়াচ্ছে কিনা।
দ্বিতীয়তঃ প্রশ্ন আসে
খরগোশ বাচ্চা দিলে কোথায় রাখবেন। খরগোশের বাচ্চা জন্মের পরেই ছোট বাচ্চাগুলোকে কোথায় রাখবেন এটা অনেক বড় একটা প্রশ্ন। অবশ্যই বাচ্চা জন্মের পর থেকে ওই নতুন বাচ্চাগুলোকে পুরো আলাদা একটা খাঁচায় বা আলাদা একটা বাক্সের মধ্যে রাখুন। এদেরকে কখনোই অন্য খরগোশের সাথে রাখবেন না। শুধুমাত্র এই খরগোশ গুলোর মা বাদে অন্য কোন খরগোশ যেন এই বাচ্চাগুলোর কাছে না আসতে পারে এটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ছেলে খরগোশ বা মা ব্যতীত অন্য কোন মেয়ে খরগোশ ইচ্ছাকৃতভাবে ছোট বাচ্চা খরগোশকে না মারলেও ওদের নাড়াচাড়া এবং পায়ের নিচে পড়ে বাচ্চাগুলো ব্যথা পেতে পারে এমনকি ছোট অবস্থায় মারাও যেতে পারে। তাই অবশ্যই ওদেরকে আলাদা একটা খাঁচাতে রাখবেন। এমনকি মা খরগোশটা কেউ আলাদা খাঁচাতে রাখবেন। কিন্তু না খরগোশের খাঁচা এবং বাচ্চাদের খেলার মাঝখানে মুখ সবসময় খোলা রাখবেন। এভাবে রাখাটা সবচেয়ে নিরাপদ তবে আপনার কাছে যদি অনেক বড় খাঁচা থাকে বা অনেক বড় কোন বাক্স থাকে তবে মা ও বাচ্চা খরগোশ গুলোকে এক খাঁচাতে সাথে রাখতে পারেন।
এই খাচাটা তে দেখুন কিভাবে সেটআপ করা হয়েছে এখানে মুখোমুখি দুইটা খাঁচা নেয়া হয়েছে এক টা খাঁচাতে মা খরগোশটা থাকে এবং আরেকটা খাঁচায় বাচ্চাগুলোকে থাকতে দেয়া হয়েছে। বাচ্চাগুলো যাতে খাঁচার গ্রিলে শরীর লেগে ব্যথা না পায় এজন্য খাঁচার নিচের অংশে একটা ছালা বিছিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এর উপর অনেকগুলো তুলা দেয়া রয়েছে। এগুলো দেয়া হয়েছে যাতে বাচ্চা গুলো ব্যথা না পায়। আরজে সাদা সাদা তুলোর মত জিনিস গুলো দেখতে পাচ্ছেন এগুলো হলো মা খরগোশের লোম ও নিজেই এগুলো তুলে তার বাচ্চাগুলোকে সবসময় ঢেকে রাখার চেষ্টা করে।
আসলে এই খরগোশ টা বাচ্চা দিয়েছিল একটা শোকেজের নিচে। সেখান থেকে একদিন পর আমরা বাচ্চাগুলোকে বের করে এই খাঁচা টার মধ্যে দিয়েছি। অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বাচ্চাগুলোকে এই খাচাতে ট্রান্সফার করা হয়েছে। আর আপনারও যদি খরগোশের বাচ্চা গুলোকে তার জন্মের পরপর জায়গা পরিবর্তন করে দিতে হয় তবে একদিন অপেক্ষা করে পরিবর্তন করবেন আর বাচ্চাগুলোকে ধরার সময় গ্লাভস পরে বা হাতে পলিথিন পড়ে তারপর ধরবেন।
এরপর আসে মা খরগোশের খাবার দাবার
যেহেতু বাচ্চা খরগোশগুলো জন্মের থেকে 14 দিন পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খায় তাই এ সময় মা খরগোশকে অতিরিক্ত হারে খাওয়াতে হবে। যাতে করে বাচ্চা গুলো তাদের প্রয়োজন মত দুধ পায়। চেষ্টা করবেন এই সময় মা খরগোশ টাকে প্রচুর দূর্বা ঘাস খেতে দিতে। দেখুন এই মা খরগোশটা কিভাবে বসে বসে দূর্বা ঘাস খাচ্ছে। ও স্বাভাবিকের চেয়ে তিনগুণ পরিমাণ খাবার এখন গ্রহণ করছে। আপনাকেও এই বিষয়টা খেয়াল করতে হবে যেন মা খরগোশটা এ সময় প্রচুর পরিমাণে খাবার পায়।
শুধুমাত্র এই তিনটা কাজ যদি আপনি ঠিকভাবে করতে পারেন তবে আপনার খরগোশ যতগুলি বাচ্চাদের না কেন সবগুলো বাচ্চাকে আপনি বাঁচাতে পারবেন। এক নাম্বারে বাচ্চাগুলো প্রতিদিন ঠিকভাবে খাচ্ছে কিনা খেয়াল করবেন দ্বিতীয়তঃ বাচ্চাগুলোকে সেপারেট খাঁচায় বা নিরাপদ জায়গায় রাখবেন এবং তৃতীয়তঃ মা খরগোশটা কে স্বাভাবিকের থেকে তিন-চারগুণ পরিমাণ খাবার দেবেন।
Original Source Link